সবসময় Mask পড়ে থাকার অভ্যাসটি ঠিক না !!

Writer : ডা. কাওসার, ঢামেক, কে-৬৫

রাস্তা দিয়ে হাঁটছি, বেখেয়ালি এক লোক হঠাৎ এসে ধাক্কা খেল। চেয়ে দেখি তার হাতে হাত মোজা, মুখে মুখ মোজা!

  • উনি স্যরি বললেন।
  • – ইটস ওকে। আপনি কি পেশায় একজন চিকিৎসক?
  • – না ভাই, চাকরী করি।
  • – হাতে গ্লাভস কেন?
  • – ভাইরাস থেকে বাঁচতে!
  • – মুখে মাস্ক কতক্ষণ পড়ে থাকেন?
  • – প্রায় সারাদিনই পড়ি!
  • – ধন্যবাদ আপনার সতর্কতার জন্য। কিন্তু এটা ঠিক না, এভাবে ঠিক না!

আমাদের skin হল জীবাণুর বিরুদ্ধে একটি primary defence. skin এ যে sweat বা sebaceous discharge হয় তার anti-microbial properties আছে, যা চেষ্টা করে হাতে থাকা microbes কে প্রতিরোধ করতে।

একজন সাধারণ মানুষ যখন সারাক্ষণ Latex গ্লাভস পড়ে থাকেন, তার সেই হাতে কোন ভাইরাস লাগলে সেটা দীর্ঘ সময় সেখানেই সক্রিয় থাকে। তার নাকের মধ্যে হঠাৎ শুরুশুরি হল, তিনি কিন্তু গ্লাভস খুলে নিচ্ছেন না, বা এন্টিসেপটিক হ্যান্ডরাবও করছেন না, তিনি সরাসরি গ্লাভস পড়া হাত দিয়েই নাক চোখ চুলকাচ্ছেন! এতে তার infected হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। বরং সাধারণ মানুষ হিসেবে গ্লাভস ছাড়া খালি হাতে থাকলেই তিনি বেশি ভাল থাকতেন!

আমরা হাসপাতালে রোগী দেখার সময় যখন গ্লাভস পড়ি, তার কারণ যেমন ওটির সময় আমাদের হাত থেকে জীবাণু যেন রোগীর শরীরে না যায়। বা রোগীর রক্ত পুজ সরাসরি যেন হাত দিয়ে স্পর্শ না করতে হয়, যার মাধ্যমে রোগীর ইনফেকশনে আমরা নিজেরা infected হতে পারি।

বর্তমানে হাসপাতালে আমরা অনেকে অধিকাংশ সময় gloves পড়ে থাকি। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে এই গ্লাভস পড়া হাত দিয়ে রোগী হ্যান্ডেল করে অন্য কিছু স্পর্শ করার আগে antiseptic solution দিয়ে হ্যান্ডরাব করছি কিনা। পাশাপাশি দেখতে হবে একটা রোগী দেখে ওই একই gloves পড়া হাত দিয়ে অন্য রোগী দেখার আগে হ্যান্ডরাব করছি কিনা, stethoscope diaphragm মুছে নিচ্ছি কিনা। এটা না করলে এক রোগীর ইনফেকশন যেতে পারে অন্য রোগীর শরীরে।

মনে রাখা ভাল, PPE পড়ার পরও স্বাস্থ্যসেবার সাথে জড়িত অনেকের আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হল improper PPE etiquette, কারণ এটা নিয়ে কার্যকর কোন ট্রেনিং দেয়া হয়না।

এবার আসি মাস্ক নিয়ে। রাস্তায় ধাক্কা খাওয়া ওই ভদ্রলোক সতর্কতার সহিত সারাদিনই প্রায় মাস্ক পড়ে থাকেন! শুনতে অপ্রিয় লাগলেও এই অভ্যাসটি ঠিক না!

আমরা যখন শ্বাস নিই, তখন শুধু যে বাতাস ও তার সাথে ধুলাবালি নিই তা কিন্তু না। পাশাপাশি নাক দিয়ে টেনে নিই আরো কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। করোনা ছাড়া বাকি যারা আমাদের respiratory tract এ প্রবেশ করে তাদের কেউ হয়তো কোন mild symptoms করতে পারে, কেউ তো আরো benign – যারা আমাদের রোগ প্রতিরোধের সাথে পাল্লা দিয়ে কিছুই করতে পারে না বরং normal flora হিসেবেই থাকে।

ধরুন, সাধারণ করোনা ভাইরাস যারা এই novel করোনা ভাইরাসের মত খারাপ না, তাদের কেউ শরীরে ঢুকে সাধারণ flu like illnesses তৈরি করলেও এটা খারাপ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে immunity বাড়াতে সাহায্য করে। এমনকি যে normal flora গুলো respiratory tract এ জমা হয় তারাও immunity বাড়ায়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ নেয় ক্ষতিকর ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে।

তাই কোন সাধারণ মানুষ যদি সারাক্ষণ ঘরে বাইরে মাস্ক পড়ে থাকে তবে তাতে তার যতটা না উপকার হবে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে! কেউ বাইরে কোন জনসমাগমে গেলে এটা ব্যবহার করবে, আর বাকি সময় স্বাভাবিক বাতাসে মাস্ক ছাড়া শ্বাস নিবে এমনটাই হওয়া উচিৎ।

কেবিনের এক অন্য শ্বাসজনিত রোগের রোগী, যিনি মাস্ক পড়ে থাকেন। একটি না বরং দুটি ভিন্ন ধরণের মাস্ক একসাথে! তিনি জানালেন তার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বললাম, ‘আপনি কেবিনের একা রোগী, আপনার তো সারাক্ষণ মাস্ক পড়ার দরকার নাই। কেউ যখন দেখতে আসবে, তখনই কেবল পড়তে পারেন। আর যারা আপনাকে দেখতে আসবে আপনার চেয়ে তাদেরই বরং মাস্ক পড়ে থাকা বেশি জরুরি।

এই কথাটি প্রযোজ্য করোনা ওয়ার্ডের ক্ষেত্রেও। কারো যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, অক্সিজেন saturation কম থাকে, তাকে যদি সব সময় মাস্ক পড়ে থাকতে বলি – তাতে তার শ্বাসকষ্ট আরো বাড়বে, অক্সিজেন স্যাচুরেশন আরো কমবে। তাই এসবের সঠিক ব্যবহার rational ও timely হওয়া উত্তম। অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট, বিষয়টা যেন এমন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক!

Edited By : Nahid Hassan.