কেন Pap’s test/ VIA test করা হয় !!!

Writer :

Dr. Tania Hafiz
2003-2004

Pap smear or VIA test

আজকের বিষয়টা হয়তো খুব সহজ মনে হচ্ছে কিন্তুু আমাদের জিপি প্রাকটিসে এই বিষয়টির গুরুত্ব খুবই বেশি।

আচ্ছা আমরা কি শুধু রোগ নিয়েই রোগীকে বুঝাই/ ঔষধ লিখে দেই??
“না”❎।

জিপি যারা করি তাদের অনেক দায়িত্ব। যেমনঃ একজন মা তার ছোটো বাচ্চাকে নিয়ে আপনার চেম্বারে আসলেন ” কাশির সমস্যা নিয়ে”। সেই বাচ্চাকে ঔষধ লিখার পাশাপাশি আমাদের কিন্তুু তার টিকা নিয়ে কিছু কাউন্সিলিং করতে হবে। আবার ধরুন একজন মহিলা আসলেন সাদাস্রাবের সমস্যা নিয়ে তাকে কিন্তুু জরায়ু ক্যান্সারের টিকা সম্পর্কে কিছু তথ্য দিতে হবে।

যাইহোক এখন আসি মূলকথায়।

কেন Pap’s test/ VIA test করা হয়?
—————————————————————————
জরায়ুমুখের ক্যান্সারকে ডায়াগনোসিস করার জন্য এই টেস্ট করা হয়।


Pap’s test or VIA test কাদের করবো?
—————————————————————————-
🔴 ২৫ বছরের পর থেকে প্রত্যেকজন বিবাহিত নারীকে।
🔴 অবিবাহিত নারী কিন্তুু তিনি একবার হলেও যৌনকাজে লিপ্ত হয়েছিলেন এমন।

🔴 বিবাহিতা যাদের পরিবারে জরায়ুমুখের ক্যান্সার/ জরায়ুর ক্যান্সার/ ব্রেস্ট ক্যান্সারের ইতিহাস আছে।

কখন VIA test/ Pap’s test করতে হবে?
————————————————————————–
🔴 মাসিকের ১০-২০তম দিনে এই টেস্ট করা ভালো।
🔴 টেস্টের ২৪ ঘন্টা আগে থেকে সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
🔴 টেস্টের ৪৮ ঘন্টা আগে থেকে যোনীপথে কোনো ট্যাবলেট, পারফিউম, কন্ট্রাসেপটিভ ফোম-জেলি এগুলো বিরত থাকতে হবে।

কতদিন পরপর করতে হবে?
—————————————————————————
পরপর ৩ বছর করতে হবে, এবং এই ৩বছর যদি রেজাল্ট নেগেটিভ হয় তাহলে রোগীকে বলে দিতে হবে প্রতি ৩-৫ বছর পরপর VIA/ Pap’s test করতে ৬০বছর পর্যন্ত।

কিন্তুু যদি রোগীর পরিবারে জরায়ুমুখের ক্যান্সার/ জরায়ুর ক্যান্সার/ ব্রেস্ট ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে তাহলে রোগীকে প্রতি বছরে একবার করে এই টেস্ট করতে হবে।

যদি পজিটিভ রেজাল্ট হয় ?
————————————————————————-
যদি টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ হয় তখন কলপোস্কপি (Colposcopy) করা হয়.


কিকি সমস্যা/ লক্ষন দেখে টেস্ট দিবো ?
—————————————————————————-

প্রথমেই বলা হয়েছে যে ২৫ বছরের পর থেকে এই টেস্ট প্রত্যেক সেক্সুয়ালি একটিভ মহিলাদের করতে হবে।

এরপর যদি কোনো রোগী আপনার চেম্বারে দীর্ঘদিনের লিউকোরিয়ার সমস্যা নিয়ে আসেন, PID, post coital bleeding নিয়ে আসে তাহলে এই টেস্টের advice করবেন।

এছাড়া Family History জরায়ুমুখের ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার ইত্যাদি থাকলে তখনও এডভাইস করতে হবে।

রোগীকে কিভাবে কাউন্সিলিং করবেন?
—————————————————————————-

মেয়েদের সাধারণত ব্রেস্ট ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার এখন অনেকবেশি হচ্ছে। আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে এই বিষয়ে। জরায়ুমুখের ক্যান্সার জানার জন্য এখন খুব সহজে একটা টেস্ট করা যায়। এই টেস্ট সব জায়গায় হয় না। আমি আপনাকে এখন যে ঠিকানাটা বলে দিবো সেখানে গিয়ে টেস্ট করে আমাকে দেখাবেন।
এরপর রিপোর্ট নেগেটিভ হলে জরায়ুমুখের ক্যান্সার রোধ করতে যে ভ্যাকসিন আছে ওটা দিয়ে নিবেন। তাহলে আপনি সুরক্ষিত থাকবেন।

অনেক রোগী জিজ্ঞেস করেন যে ম্যাম যদি রেজাল্ট পজিটিভ হয় তখন?
🔴 এটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। তখন কি করতে হবে আমি বলে দিবো। কিন্তুু আপনি যদি এই পজিটিভ হওয়ার কথা ভেবে টেস্ট না করেন তাহলে সমস্যা আরো গুরুতর হবে তখন চিকিৎসা করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
যেকোনো সমস্যা প্রথমেই সনাক্ত করতে পারলে আমাদের জন্য চিকিৎসাসেবা দেয়া সহজতর হয়।

আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেন ম্যাম ইনজেকশন দিবে না তো? ব্যাথা পাবো নাকি?
🔴 কিছুই করবেনা। শুধু গাইনী চেম্বারে নিয়ে আপনার জরায়ুর মুখ থেকে একটু রস নিয়ে পরীক্ষা করে দেখবে ক্যান্সারের কোনো জীবানু আছে কিনা। আপনি একটুও ব্যাথা পাবেন না।

গাইনী প্রাকটিস যেমন খুবই সহজ ঠিক তেমনই প্রচুর কথা বলতে হয় এইধরনের রোগীদের সাথে। খুব ভালো করে বুঝাতে পারলে রোগী যেকোনো টেস্ট করতে রাজী হোন। আমি বলবো শুধু গাইনী নয় মেডিকেলের প্রত্যেকটা শাখাতেই রোগীর সাথে কথা বলতে হবে, কাউন্সিলিং করতে হবে সঠিকভাবে, বুঝাতে হবে বিষয়টি সময় নিয়ে। তখন দেখবেন রোগী নিজে থেকেই কাজটি করতে চাইবে↔ সচেতনতা বাড়বে↔ আর সেখানেই আমাদের সার্থকতা।

Edited By : Nahid Hassan.