অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের নজরে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সঃ এ ভিজিবল ডেমন
নিঃসন্দেহে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম আশীর্বাদ হলো অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার।কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর এ সময়ে এসে আমরা ভুগছি এমন এক সমস্যায় যা নিকট ভবিষ্যতে আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
বলছিলাম AMR তথা Anti Microbial Resistance এর কথা।এটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর একটি অন্যতম প্রধান কারণ।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হলো এমন একটি সিচুয়েশন যখন কতিপয় ব্যাকটেরিয়া গাঠনিক ও রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার সক্ষমতা অর্জন করে।যার দরুন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলি কম কার্যকর হয় বা হয়ই না।
বাংলাদেশের দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা মান,অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার এবং অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে Anti Microbial Resistance এর পার্সেন্টেজ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।একটি সমীক্ষা থেকে দেখা যায় BSMMU এর ICU তে প্রায় ৫২% রোগী Multi antibiotic resistant.আমরা যেসব ব্রয়লার মুরগী খাদ্য হিসেবে গ্রহন করি সেগুলোর প্রায় ৫৪.৫৫ শতাংশ Multi antibiotic resistant ব্যক্টেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত।কিছু কমন রেজিস্ট্যান্ট ব্যাক্টেরিয়া হলো Salmonella typhi, Pseudomonas aeruginosa, Klebsiella pneumoniae, Escherichia coli, Acinetobacter baumannii, Staphylococcus aureus, Enterococcus spp. ,Streptococcus pneumoniae ইত্যাদি। যদি আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের একটা খন্ডচিত্র তুলে ধরতে চাই,বর্তমানে প্রেসক্রিপশন ছাড়া প্রায় ১০ লক্ষ এন্টিবায়োটিক প্রতিদিন বিক্রি হয়,যা বছরে প্রায় ৩৫.০৫ কোটি।বিশেষত আমাদের দেশে মানুষ চিকিৎসকের তোয়াক্কা না করে নিজেরাই ফার্মেসিতে গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে এবং Antibiotic এর কোর্স সম্পূর্ণ করে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারনা মতে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হতে পারে শুধুমাত্র AMR এর কারনে।সুতরাং AMR এর ব্যাপারে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারন
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হলো যখন ব্যাকটেরিয়া ঔষধের উপস্থিতিতে সামগ্রিকভাবে প্রভাবশীল হয় না। এই ভয়ানক সমস্যার সামান্য কারণগুলির মধ্যে অনিয়মিত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ, যার মধ্যে অন্যতম,
অসম্পূর্ণ চিকিৎসা (Incomplete Treatment): নির্ধারিত অ্যান্টিবায়োটিকের সম্পূর্ণ চিকিৎসা সম্পন্ন না করার কারনে চিকিৎসার মধ্যে বেঁচে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলির জন্য তা সুযোগ হয়েদাঁড়ায় যার ফলে তারা রেজিস্ট্যান্ট হতে পারে।
অনিয়মিত ডোজ ( Irregular dosage ) : অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ অনির্দিষ্টভাবে বা ডোজ বাদ দেওয়া হলে ব্যাকটেরিয়াগুলির বৃদ্ধি হওয়ার সুযোগ বেশি পায়,
স্ব-চিকিৎসা ( Self-treatment): ডাক্তার এর অনুমতি ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক অথবা পূর্বের চিকিৎসার অবশিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করার ফলে হতে পারে
অযোগ্য নির্দেশনা ( INVALID INSTRUCTIONS): অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার কারনে প্রধানত রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়,
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক,Antibiotic এর যথেচ্ছ ব্যবহারের ভয়াবহতা কি কি হতে পারে অর্থাৎ Danger of Indiscriminate use কি কি ?
Widespread sensitization of population
Hypersensitivity
Anaphylactic reaction
Super-infection
Masking of serious infection without eradicating it
Direct drug toxicity
Bone marrow suppression by chloramphenicol.
Auditory nerve damage by aminoglycosides
Nephrotoxicity by aminoglycosides,
Development of drug resistance in microbial population.
দায়িত্বশীল অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার প্রচার
এজন্য নিম্নোক্ত কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে-
অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স পূর্ন করতে হবে। সংক্রমণ রোধে নিয়মিত হাত ধুতে হবে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে,স্বাস্থব্যবস্থার মানোন্নয়ন,ভ্যাক্সিনেশন হালনাগাদ করতে হবে। এছাড়াও দেশের ফার্মেসিগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি, যাতে কেউ বিনা প্রেসক্রিপশনে ক্রেতার কাছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করে।যেকোনো ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ থেকে দ্রুত রোগমুক্তিতে অ্যান্টিবায়োটিকের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু কথায় আছে না,লেবু বেশি কচলালে তেতো হয়ে যায়, অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রেও ঠিক যেন তেমনটাই হচ্ছে।আমাদের অসতর্কতার কারনে বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিক এর ব্যবহার ভয়ংকর পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।মাত্রাতিরিক্ত ও যথেচ্ছ ব্যবহারে যদি আজ আমরা লাগাম না টানি, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বড় কঠিন সময়ের মোকাবেলা করতে হবে।
সরকার এর পক্ষ থেকে কিছু কার্যক্রম নেয়া যেতে পারে :
শিক্ষা ও সচেতনতা: জনগণের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানে সচেতনতা উন্নত করার জন্য জনগণের শিক্ষা অভিযান ও চিকিৎসা প্রদানকারীর প্রশিক্ষণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক স্টুয়ার্ডশিপ: অ্যান্টিবায়োটিক স্টুয়ার্ডশিপ প্রোগ্রামগুলি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, উপজেলা গুলো তে আয়োজন করতে হবে,
নিয়ম এবং পর্যবেক্ষণ: অ্যান্টিবায়োটিক নির্দেশনা এবং বিতরণের নিয়মগুলি সম্পর্কে নিয়মগুলির পরিচালনা বাড়ানো এবং অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরিদর্শন প্রচার করতে হবে।
গবেষণা ও উন্নত প্রযুক্তি: নতুন অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যাল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতির গবেষণা ও উন্নত প্রযুক্তি অবশ্যই রেজিস্ট্যান্ট অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধে আমাদের সাহায্য করবে,
সমাপ্তি :
পরিসংখ্যানগত ভাবে দেখা যায় যে, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্রেন্স একটি গভীর ও জটিল সমস্যা। এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাকে শীঘ্রই আমাদের সম্ভব হতে হবে, কারণ এটি না শুধুমাত্র স্বাস্থ্য পরিসেবা ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে, বরং সামাজিক ও আর্থিক অস্থিরতার সৃষ্টি করে। সার্বজনীন সচেতনতা, যথার্থ বিজ্ঞানীদের অনুশীলন এবং সম্প্রদায়ের সহযোগিতা দ্বারা এই সমস্যার সমাধানে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।
Muhammad Nahid Hassan Bashundhara Ad Din Medical College, Session : 2019-2020
!!! Antibiotics নিয়ে কনফিউজড থাকেন আপনি? কাকে কোন এন্টিবায়োটিক দিবেন বুঝতে পারেন না?
প্রায়শই আমাদের যে গ্রুপের মেডিসিন সবচেয়ে বেশি প্রেসক্রাইব করতে হয়, নিঃসন্দেহে ANTIBIOTICS! কিন্তু “SELECTION OF THE BEST ANTIBIOTIC” সম্পর্কে অনেকের জ্ঞান না থাকায় প্রায়শই আমাদের ভুল হয়ে যায়, এতে রোগীদের ক্ষেত্রে যেমন ভোগান্তির শিকার হতে হয়, মৃত্যুঝুঁকি আর সাথে ANTIBIOTIC RESISTANCE এর ভয় তো আছেই… তাই,এই অতি প্রয়োজনীয় ANTIBIOTICS সম্পর্কে আদ্যোপান্ত জানাতে MEDIVERSE নিয়ে এলো –
আলোচনা হবে – ১. কোন ইনফেকশনে কোন এন্টিবায়োটিক দিতে হবে? ফার্স্ট ,সেকেন্ড ,থার্ড চয়েজ কোনটা? ২. Antibiotics দেবার ক্ষেত্রে কোন কোন ড্রাগ চেঞ্জ করতে হবে? ৩. Antibiotics কতদিনের জন্যে, কোন রুটে দিলে সবচেয়ে ভালো হবে? ৪. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চয়েজ কিভাবে করবেন? ৫. প্রেগন্যান্সি তে চয়েজ কিভাবে করবেন? ৬. দাম বিবেচনায়, গরীব রোগীদের জন্যে কোন এন্টিবায়োটিক ভালো হবে? ৭. Antibiotics applied pharmacology ৮. Clinical microbiology ৯. ক্লাস শেষে প্রাইভেট চ্যাট গ্রুপে বিভিন্ন ডিসকাশন করা হবে ইনশা আল্লাহ। ১০. ক্লাসগুলো ওয়েবসাইট থেকে দেখা যাবে ইনশা আল্লাহ । যেনো যেকোনো antibiotics প্রেসক্রাইব করার সময় আপনি থাকেন একদম কনফিডেন্ট ইন শা আল্লাহ !
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.