আমরা কি জানি যে দিনে কতবার ফেসওয়াশ করতে হয়?

Writer : Dr. Tania Hafiz
2003-2004
Z.H Sikder Women’s Medical College and Hospital

টপিকটা ভিন্ন, জানিনা আপনাদের জন্য কতটা হেল্পফুল হবে। তবে আমার চেম্বার প্রাকটিসে খুব ভালো কাজ হয়।

  • আমরা কি জানি যে দিনে কতবার ফেসওয়াশ করতে হয়?
  • আর স্ক্রাবার?
  • ফেসওয়াশের নিয়মাবলি?
  • কি করা যাবে/কি করা যাবেনা?

শুধুমাএ রোগীর ক্ষেএে নয় নিজেদের ক্ষেএে কতটা জানি? আসুন তাহলে এই বিষয়ে আলোচনা করি।

প্রায়ই মানুষকে বলতে শুনি যে কারো সাথে দেখা হলে/পরিচয়ে মানুষ নাকি প্রথমেই মুখমন্ডল ও পদযুগল এর দিকে তাকায়। আমি জানিনা এর সত্যতা কতটুকু। সবকিছু সুন্দর সাদা ধবধবে হতে হবে এমনটি নয়, কিন্তুু সঠিক নিয়মে পরিচর্যাতো করা যেতেই পারে।

এখন আসল কথায় আসা যাক। সেই মুখমন্ডল ওয়াশের কিছু নিয়ম আছে যা Dermatologists রা এডভাইস করে থাকেন।

আমি একজন জেনারেল প্রাকটিশনার। সবসময়ই চেষ্টা করি রোগীকে যথাযথ সেবা দিতে। হুম, কিছু রোগী আসেন যারা হয় Dermatitis/Tinea/vitiligo etc etc এর সমস্যা অথবা তাদের বাচ্চার Impetigo/folliculitis etc এর সমস্যা অথবা অন্যকোন গাইনেকোলজিকাল সমস্যা নিয়ে, তখন জিজ্ঞাসা করেন “ম্যাম কোন ফেশওয়াশ ব্যবহার করা ভালো/কি করলে স্কিন ভালো থাকবে /সাবান ব্যবহার করাতে স্কিন রাফ হয়ে যাচ্ছে /আমি দিনের মধ্যে কয়েকবার মুখ ধুই তারপরও আমার স্কিন এমন কেন??? ইত্যাদি ইত্যাদি “

আমি কোনো রোগীকে কখনও এই বলে ফিরিয়ে দেইনা যে “এটাতো আপনার সমস্যা ছিলোনা, যেটা ছিলো সেইটার ঔষধতো প্রেসক্রিপশনে লিখেই দিয়েছি”। বরং রোগীকে তখন বুঝিয়ে দেই এই বিষয়ে যতটুকু জানি ততটুকু। এটা একটা টেকনিক। কারন আমাদের সবার উচিত রোগীকে রেসপন্স করা এতে রোগী আপনার ভক্ত হবেন, আপনার উপর আস্থা ফিরে পাবেন, এবং আপনি পরবর্তীতে এর একটা ভালো Feedback ও পাবেন। (এ জীবনে কত যে রোগীর সাথের এটেনডেন্সের বিপি মেপেছি, ওজন মেপে দিয়েছি তার শেষ নাই, এতে রোগীর হাসিমুখ দেখতে পাই)।

জেনারেল প্রাকটিশনারদের অনেক বড় একটা দিক থাকতে হবে রোগীকে সময় দেয়া, এই সময় যে শুধু প্রেসক্রিপশন লিখতেই তা কিন্তুু নয় –সাথে কাউন্সিলিং, কোন নিয়মাবলি থাকলে সেইটা বুঝানো, তার খোঁজখবর নেয়া, ঔষধ,টেস্ট বুঝিয়ে দেয়া ইত্যাদি। রোগী আপনার ভক্ত হবেই।

এবার আসুন সেই ফেশওয়াশ নিয়ে আলোচনায়…..

  • অনেকবার নয়, সারাদিনে ২বার (সকাল-সন্ধ্যা) ফেশওয়াশ যথেষ্ট

🔴 আর স্ক্রাবার?
এটা সপ্তাহে ১বারই যথেষ্টঅতিরিক্ত স্ক্রাবার স্কিনের জন্য ক্ষতিকর। কিভাবে? স্ক্রাবারের শক্ত দানাগুলি চামড়াতে ঘর্ষন করে ➡ irritation ➡ redness ➡ burning ➡ Rough skin।

সুতরাং আমি আমার রোগী/relatives দের বলি সপ্তাহে ১দিন স্ক্রাবিং+ছোটো নরম দানাদার স্ক্রাবার। এতে আপনার স্কিন ভালো থাকবে। আরেকটা কথাঃ স্ক্রাবার দিয়ে জোরেজোরে ঘষা যাবেনা (অনেকেই মনে করেন যে জোরে ঘষলে সব ময়লা,dead cell উঠে যাবে। ভুল ধারনা) +আলতো হাতে নিচে থেকে উপরে এভাবে মাসাজ, নো উপর থেকে নিচে মাসাজ

এবার আসুন রেগুলার ফেশওয়াশের নিয়মঃ

প্রথমে দুই হাত পরিস্কার করতে হবে। তারপর নরমাল/কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া। কোনো মাসাজ/ডলাডলি নয়। পানির ঝাপটা যাকে বলে এমন করে দেয়া।

⚠Note: হাতে ময়লা থাকলে তাহলে মুখের porse যাবে/ব্যাকটেরিয়াল contamination হতে পারে/ irritation হবে, তাই নিজের হাত প্রথমেই ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

⬇ এরপর বাম হাতের তালুতে liquid/foaming ফেশওয়াশ নিবো। তারপর ডান হাতের তালু দিয়ে আলতো করে ঘষেঘষে ফেনা তুলতে হবে। (অনেকেই মুখে ফেশওয়াশ দিয়ে তারপর মুখে ঘষেঘষে ফেনা তুলেন যেটা সঠিক নিয়ম নয়)।
⚠Note: মুখে অনেক্ক্ষণ ঘষে ফেনা তুলাতে স্কিনের উপর অতিরিক্ত চাপ পরে।

⬇ এরপর দুই হাতের তালুতে যে ফেনা আছে সেইটা আলতোভাবে প্রথমে দুই গালে, তারপর একহাত দিয়ে কপালে, আরেক হাতেরটা চিনে (থুতনিতে),নাকেও লাগাবেন। চাইলে গলাতেও লাগাতে পারেন।

⬇ এরপর দুইহাতের প্রথম তিনটা আঙুল ( Index, middle, ring finger) দিয়ে প্রথমে দুইগালে আলতো করে নিচ থেকে উপরের দিকে massage করবেন। এরপর কপালে, চিনে, দুই হাতের index /little finger দিয়ে নাক ও তার চারপাশে, আর চোখের পাশে circular movement massage। তারপর গলায় নিচ থেকে উপরে massage।
⚠Note::(উপর থেকে নিচে মুভমেন্টে চামড়া অসময়ে তার নমনীয়তা হারায়, elasticity কমে যায়, ঝুলে পরে। তাই নিচে থেকে উপরে মুভমেন্ট massage করতে হয়)

⬇ এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখমন্ডল ধোয়া।
ঔসময় কিন্তুু কোনো মাসাজ বা ঘষা যাবেনা।

⬇ এরপর অনেকেই আছেন যে towel দিয়ে মুখ এলোপাতাড়িভাবে মুছেন যা মোটেও ঠিক নয়। যদি মুছতেই হয় তবে পরিস্কার টাওয়েল দিয়ে হাল্কাভাবে চেপে মুছবেন।
আরো একটা নিয়ম আছে সেইটা হলো মুখ ধুয়ার পর হাত মুছে পরিস্কার- শুকনো হাত দিয়ে গাল, কপাল, চিন, চোখ, নাক ২-৩বার স্পর্শ করলেই অটোমেটিক পানি শুকিয়ে যায়।

আমি যেটা করিঃ আমি নিজে প্লাস অন্যান্যদের বলি পানি দিয়ে ধোয়ার পরে মুখ না মুছা।
⚠Note: এতে করে একটা লাভ হলো স্কিন পানিটা শুষে নেয় এবং স্কিনটা অনেক সময় hydrate থাকে,স্ফট ও আরামদায়ক হয়।

আপনাদের হয়তো মনে হচ্ছে প্রসিডিউরটা অনেক লম্বা সময়ের,আসলে কিন্তুু তা নয়। লিখা পরছেনতো তাই লম্বা মনে হচ্ছে যখন প্রাকটিকালি করবেন তখন সহজ মনে হবে।

Edited By : Nahid Hassan.